স্থূলকায় নারীদের নিয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে শুরু হয়েছে মিস অ্যান্ড মিসেস প্লাস বাংলাদেশ সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা। সমাজে বডি শেমিংয়ের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করতেই বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হয়েছে এই প্রতিযোগিতার। ১১ জুন থেকে রাজধানীর ঢাকায় শুরু হয়েছে দেশের স্থূলকায় নারীদের নিয়ে রিয়েল হিরো প্রেজেন্টস মিস অ্যান্ড মিসেস প্লাস অনুষ্ঠানটি। দেশ ও দেশের বাইরের নানা বয়সী বিবাহিত ও অবাহিত নারীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন।
আয়োজক রিয়েল হিরোস এক্স প্রো অ্যান্ড কমিউনিকেশনসের প্রতিষ্ঠাতা মালা খন্দকার বলেন, ‘মিস অ্যান্ড মিসেস প্লাস বাংলাদেশ’-এ অংশগ্রহণে আগ্রহী প্রতিযোগীদের অনলাইন রেজিস্ট্রেশন শুরু হয় ২০২১ সালের নভেম্বরে। সেখানে দেশের নানা বয়সী বিবাহিতা ও অবিবাহিতা ৪০০ জন প্রতিযোগী রেজিস্ট্রেশন করেন। সেখান থেকে অনলাইনেই প্রাথমিক বাছাই শেষে ২০০ জনকে বেছে নেওয়া হয়। সেই তালিকা থেকে অডিশন রাউন্ডের মাধ্যমে টপ-৪৫ বেছে নিয়ে এখন চলছে তাদের গ্রুমিং। ২২ তারিখ এই প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে এবং ২৩ জুলাই ‘মিস অ্যান্ড মিসেস প্লাস বাংলাদেশ’-এর গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠিত হবে।
অডিশন রাউন্ডে বিচারক হিসেবে ছিলেন রোজিনা, ইমন, ব্লগার লিয়োনা রাহমান, প্রবীর রয় চৌধুরী, চয়নিকা চৌধুরী, কনসালটেন্ট তাওহীদা রহমান ইরিন, ডিজাইনার পর্শিয়া, ফ্যাশন ডিজাইনার সিলভি মাহমুদ, ডাক্তার লাইলা নুর নাজনিন এবং সিনিয়র নিউজ প্রেজেন্টার মুমতাহিনা হাসনাত রিতু প্রমুখ।
এই সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন নাট্যকার ও অভিনেত্রী নির্জন মমিন। নির্জন মমিন বলেন, আমি মিস অ্যান্ড মিসেস প্লাস বাংলাদেশ প্রতিযোগিতার সেরা ৪৫ জনের একজন! এটি অবশ্যই আমাকে আমার স্বপ্নের কাছাকাছি যেতে সাহায্য করবে, জীবনে আরও সাহসের সাথে লড়াই করতে সাহায্য করবে। মানুষের নেগেটিভ কমেন্ট’কে ইগনোর করে আমার অভিনয় আর লেখার গুণ দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। অভিনয়টা আমার প্যাশন। আমি প্রমাণ করতে চাই যে সমাজের ঠিক করে দেয়া সৌন্দর্যের মাপকাঠিই সবকিছু নয়। সৃষ্টিকর্তা যাকে যেভাবে সৃষ্টি করেছেন সে সেভাবেই তার কর্ম ও গুনের কারণে সুন্দর।
সংবাদ সম্মেলনে রিয়েল হিরো এক্সপোর্ট এন্ড কমিউনিকেশনের সিও মালা খন্দকার বলেন এই প্রোগ্রামটি প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে যে আপনার সুস্থ থাকাটাই জরুরি। আপনি কতটুকু মোটা বা আপনি দেখতে কেমন এটা কোন বিষয় না। আপনি যে রকমই দেখতে হও না কেন আপনি যদি সুস্থ থাকেন এবং আপনি যদি আপনার সাইজ নিয়ে খুশি থাকো তাহলেই যথেষ্ট।তিনি আরো বলেন আমার একটাই প্রশ্ন সকল র্যাম্প শো গুলোতে, সকল রিয়েলিটি শো গুলোতে, ব্র্যান্ডের জামা গুলোর ফটোশুট করতে কেনো সব সময় স্কিন মেদভুঁড়ি ছাড়া মেয়েরাই করবে। এই দেশে কি শুধু মেদ ভুঁড়ি ছাড়া এক শ্রেণীর মানুষ এই জামা কাপড় পড়ে ? আপনার ভাবতে হবে কার জন্য আপনাদের এই বিজনেস। একটি মোটা মেয়ে কি সুন্দর হয় না ? সুন্দর পোশাকে তাকে কি সুন্দর লাগেনা ? ঠিকই তো আপনারা ডবল এক্সেল জামাটা বানান, তাহলে ডবল এক্সেল সাইজের একটা মেয়ের ছবি কেন তোলেন না। চিকন শরীর, সূক্ষ্ম সুতার জামা দেখিয়ে কত নারী-পুরুষের কনফিডেন্স নষ্ট করেন আপনারা তা কি জানেন? জানিনা কবে বদলাবে আপনাদের এই মানসিকতা।